বাগেরহাটের চিতলমারীর বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের পরানপুর গ্রামে চার বছরের এক শিশুকে দিয়ে কবিরাজি চিকিৎসা করাচ্ছেন তার স্বজনরা। তার কাছে চিকিৎসা নিতে প্রতিদিন শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করছেন।

তবে অবুঝ শিশুকে দিয়ে কবিরাজির নামে গ্রামের সহজ-সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিশু ইয়াসিনের বাবা উপজেলার বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের পরানপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম। চা বিক্রি করে সংসার চালাতেন তিনি। মাস দেড়েক আগে কোলের শিশুসন্তানকে দিয়ে কবিরাজি ব্যবসা শুরু করেন। চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করছে এই শিশু কবিরাজের স্বজনরা। জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসার নামে গত এক মাস ধরে চলমান এই অপচিকিৎসার আড়ালে স্থানীয় একটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

শুক্রবার সরেজমিন জাহিদুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে অসংখ্য মানুষের ভিড় দেখা যায়। শিশুটিকে সবাই কবিরাজ বলে সন্বোধন করছেন। পানি ও তেলপড়া এবং ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শিশুটি তার বাবা ও ভাইয়ের কোলে চড়ে বোতলভর্তি পানি ও তেলের শিশিতে ফুঁক দিচ্ছেন। পাশেই টেবিলে প্লাস্টিকের একটি ছোট বালতি রাখাহ হয়েছে। সেখানে হাদিয়া হিসেবে রোগীরা নগদ টাকা-পয়সা রাখছেন।

চিংগড়ী গ্রামের আফজাল শেখ বলেন, তিন দিন ধরে কবিরাজের কাছে আসছি। তেল ও পানিপড়া দিয়েছে, কিন্তু কোনো উপকার পাইনি। আবার অনেকেই বলছেন, সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে পরিবারের দাবি, শিশুটির চিকিৎসায় অনেক জটিল রোগের উন্নতি হয়েছে।

শিশুর বাবা জাহিদুল মোল্লা বলেন, আমার এক সময় কোমরে ব্যথা ছিল। চার বছরের ছেলের ঝাড়ফুঁকে তা ভালো হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার লোকজনও বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে আসেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মামুন হাসান বলেন, এটা সম্পূর্ণ কুসংস্কার। গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে এক ধরনের ধান্দায় ফেলে প্রতারণা করা হচ্ছে। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা জানান, এটা একটা ধান্দাবাজি ছাড়া আর কিছুই না। কেউ যাতে প্রতরণার শিকার না হন, সেই বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।